ডেঙ্গু জ্বর: Dengue

 ডেঙ্গু জ্বর (Dengue)

 ডেঙ্গু জ্বর: Dengue

কারণ-ডেঙ্গু ভাইরাস নামে এক জাতের ভাইরাস এই রোগের কারণ। এক ধরনের মশা এই রোগের বীজাণু বহন করে বলে জানা যায়। সব দেশে, সব বাড়িতে সব অবস্থাতেই এই রোগ হওয়া সম্ভব। ভারতেও মাঝে মাঝেই এই জ্বর হতে দেখা যায়।


লক্ষণা-

1. ইনকুবেশনের সময় 5 থেকে 6 দিন। তারপর বোগ শুরু হয়। তবে রোগ কতটা তীব্র হবে তা বিভিন্ন লোকের ক্ষেত্রে বিভিন্ন হয়। তবে রোগের লক্ষণ গুলি 7 থেকে 10 দিন ধরে চলে থাকে।

2. প্রথমে 2-3 দিন প্রবল জ্বর শুরু হয়, তারপর 2-3 দিন জ্বর একটু কম থাকে। তারপর আবার 3-4 দিন জ্বর হয়। রোগী 7 থেকে 10 দিন ভোগে।

3. সারা অঙ্গে ও গ্রন্থি সমূহে প্রবল ব্যথা হয়।

4. কম্প ও শীতবোধ হয়ে জ্বর শুরু হয়। বেশী জ্বরের প্রকোপের সময় মাথা ব্যথা খুব বেশি হয়।

5. কখনো বমি বমি ভাব ও বমি হতে পারে।

6. শরীরে প্রচন্ড, ব্যথা ও কোমরে প্রচন্ড ব্যথা এই রোগের বিশেষ লক্ষণ। কখনো ব্যথা এত বেশি হয় যে রোগী ব্যথায় কেঁদে ফেলে। এই জন্য একে হাড় ভাঙ্গা জ্বর বলে।

7. জর দুই-তিনদিন পর ছেড়ে বা কমে যায়-আবার হয়। জ্বরে তাপ 102 থেকে 105 ডিগ্রী ফারেনহাইট হয়।

. দ্বিতীয় বার জরের সময় রোগীর হাত-পা ও বুকে এক ধরনের Rash বের হয়।

9. গলার গ্রন্থি বা দেহের অন্য গ্রন্থি ফুলে উঠতে পারে ও তাতে ব্যথা খুব হয়।

10. রোগ সেরে গেলেও অনেকদিন পর্যন্ত প্রচুর দুর্বলতা থাকে।

জটিল অবস্থা (Complications)

1. অনেক সময় রক্তপাত দেহের বাইরে ও ভেতরে হয়।

2. অনেক সময় শিশু, বৃদ্ধ প্রভৃতির হৃদয় দৌর্বল্য ও আক্ষেপ, প্রদাহ, মোহ ও মৃত্যু হতে দেখা যায়।

3. তাপ কমে যাবার সময় Depression হবার জন্যও দুর্বল রোগীর মৃত্যু হতে পারে।

রোগ নির্ণয়-

১. রক্তে Leucopenia দেখা যায়।

2. গ্রন্থি ফোলা, ব্যথা প্রভৃতি লক্ষণ।

3. জ্বর মাঝে মাঝে কম। ও প্রথমে ও শেষে দুবার বৃদ্ধি।

4. দ্বিতীয় বার বৃদ্ধির সময় Rash বের হওয়া।

চিকিৎসা

  • ·      রোগের প্রথম অবস্থায় জেলসিমিয়াম মাদার বা ৩x ভাল কাজ দেয়।
  • ·      ব্যাপ্টিসিয়া মাদার বা ৩০ এ রোগের প্রথম অবস্থায় উপকারী ঔষধ!
  • ·      পরে হাড়ে ব্যথা থাকলে ইউপেটোরিয়াম পার্ফ ১০ খুব সুফল দেয়। এরপর অবস্থা অনুযায়ী আর্সেনিক ৩৪ বা সিমিসিফিউগা ৩০ উপকারী।,
  • ·      মাথা উত্তপ্ত কিন্তু সর্বাঙ্গ শীতল হলে, কার্বোভেজ ৩০।
  • ·      রোগের প্রথন অবস্থায় প্রবল জ্বর লক্ষণে, অ্যাকোনাইট ৩x দিনে কয়েকবার ভাল।
  • ·      লালবর্ণ ফুকুড়ি ও মাথায় ব্যথা লক্ষণে, বেলেডোনা ৩ বা ৬।
  • ·      গায়ে ব্যথা, ঘাম, মাথা ব্যথা, কোষ্ঠবদ্ধতা, প্রচুর ঘাম লক্ষণে, ব্রায়োনিয়া ৩, ৬ বিশেষ ভাল ফল দেয়।
  • ·      হাতে, পায়ে, গায়ে প্রচণ্ড ব্যথায় সব সময় মনে রাখতে হবে ইউপেটো-পার্ফ ১০।
  • ·      রক্তস্রাব লক্ষণে, ল্যাকেসিস ৬ বা ক্রোটেনাস্ং ৩, ৬ ৩০।
  • ·      গায়ে, মুখমণ্ডলে, নাক বা ঠোঁটের ধারে ফুস্কুড়ি, প্রবল, সর্দিজ্বর, হাত-পা কামড়ানো, কোমরে ব্যথা প্রভৃতিতে রাসূস্টক্স ৩, ৬।
  • ·      জুরের প্রথম মৃদু আক্রমণে, জেলিসিমিয়াম ১০।
  • ·      অতিসার উপসর্গ থাকলে আর্সেনিক। পেটে বা গায়ে জ্বালা থাকতে পারে।
  • ·      আক্ষেপ, পেশীর যন্ত্রণা, উত্তাপে উপশম লক্ষণে, ম্যাগফস ৬০।
  • ·      ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগের অন্যান্য ঔষধও এই সঙ্গে দেয়া উচিত।

আনুষঙ্গিক ব্যবস্থা

  • ·      সবকিছু অন্যান্য জ্বরের মতোই। তাই পৃথক বলা হলো না।
  • ·      তরল বা লঘু পথ্য দিতে হবে। তরকারীর ঝোল। জ্বর ছাড়লে ভাত ও হালকা মাছ বা
  • ·      রোগ সেরে গেলে একটি ভাল টনিক দিতে হবে। ভিটামিন জাতীয় খাদ্য বা ঔষধ উপকারী।

প্রতিরোধ –

(1) রোগীকে সব সময় মশারীর মধ্যে রাখা কর্তব্য।

2. মশা ধ্বংস করার ব্যবস্থা করতে হবে।

ইনফ্লুয়েঞ্জিন ৩০, ২০০ একটি ভাল প্রতিরোধক ঔষধ।

হোমিওপ্যাথিক প্র্যাকটিস অব মেডিসিন by Pandey থেকে হুবহু সংকলিত।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন

Ads

Ads