আঙ্গুল হাড়া রোগের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা

 

আঙ্গুল হাড়া

 আঙ্গুল হাড়া কি? হাত ও পায়ের যে কোন আঙ্গুলের অগ্রভাগে তীব্র প্রদাহ, ব্যথা ও ফুলে পুজ উৎপন্ন হলে তাকে আঙ্গুল হাড়া বলে।

আঙ্গুল হাড়ার কারণঃ

১। কাটা বা সূঁচের আঘাত

২। আঙ্গুলের চামড়া ছিড়ে গেলে বা কেটে গেলে

৩। আঘাত লাগে

৪) পুড়ে গেলে।

৫) যে কোন বিষাক্ত জিনিসে রক্তাক্ত হলে।

৬) জীবানু সংক্রমনেও হতে পারে।

 ইহার লক্ষণঃ

১) ভীষণ কষ্টদায়ক পীড়া

২) কাটা ফুটার ন্যায় তূব্র ব্যথা, জ্বালা ও যন্ত্রণা

৩) ব্যথায় রোগী চিৎকার করে; এমন কি ঘুম হয় না।

৪) আঙ্গুলের হাড় পঁচে যেতে পারে।

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাঃ

১। বেলেডোনাঃ লাল টকটকে, ভীষণ দপদপানী ব্যথা, ব্যথা হঠাৎ আসে, হঠাৎ চলে যায়, ভীষণ জ্বর, ব্যথায় প্রলাপ বকে, ঠান্ডা ও স্পর্শ‍ মোটেই সহ্য হয় না। সুন্দর চেহারা।

দৈহিক লক্ষণ

মানসিক লক্ষণ

হ্রাস

বৃদ্ধি

কি খেতে পছন্দ

বলবান ও সুন্দর দেহ এবং দেখতে সুশ্রী

হিংস্র ও উগ্র, বিকারগ্রস্ত ও স্পর্শ কাতর

উত্তাপে, স্থিরতায় ও বিশ্রামে

ঠান্ডা স্পর্শে ও সঞ্চালনে

গরম খাবার ও লেবু জাতীয় পানীয়

 ২। মাইরিষ্টিকাঃ আঙ্গুলে ভীষণ জ্বালা, যন্ত্রণা ও ব্যথা, রোগী ব্যথায় অস্থির, মান্তি পায় না, ব্যথায় রোগী কাতর হয়ে যায়, নিম্ন শক্তিতে ফাটে উচ্চ শক্তিতে বসে।

দৈহিক লক্ষণ

মানসিক লক্ষণ

হ্রাস

বৃদ্ধি

কি খেতে পছন্দ

শরীর দুর্বল ও পাতলা

বিকারগ্রস্ত, চঞ্চল ও উগ্র

গরমে ও স্থিরতায়

সঞ্চালনে ও ঠান্ডায়

গরম গরম খাবার

৩। হিপার সালফঃ অসহ্য ব্যথা, জ্বালা, ঠান্ডা ও স্পর্শ অসহ্য, চিড়িকমারা ব্যথা, রোগী সবসময় চাদর ধারণ করে, গরম দিনে প্রচুর ঘর্ম, আক্রান্ত স্থানে হাত দেওয়া যায় না। ঠান্ডা ও স্পর্শ অসহ্য, প্রথম অবস্থায় উচ্চ শক্তি প্রয়োগ করলে বসে যায়। আবার নিম্ন শক্তি প্রয়োগ করলে ফেটে যায়।

দৈহিক লক্ষণ

মানসিক লক্ষণ

হ্রাস

বৃদ্ধি

কি খেতে পছন্দ

ভেড়ভেড়ে বলবান ও শ্লেষ্মা/যবু থবু দেহ

হিংস্র, উগ্র, রাগী ও বদ মেজাজি

উত্তাপে, গায়ে ঢাকা দিলে, বিশ্রামে

ঠান্ডা ও স্পর্শে

টক, ঝাল ও উগ্র দ্রব্য

 ৪। ডায়স্কোরিয়াঃ রোগের প্রথম অবস্থায় আক্রান্ত স্থানে কাঁটা বা সূচঁ ফুটার মত ব্যথা, শরীর দুর্বল, স্বপ্নদোষের ইতিহাস, ঠান্ডায় বৃদ্ধি, গরমে উপশম।

দৈহিক লক্ষণ

মানসিক লক্ষণ

হ্রাস

বৃদ্ধি

কি খেতে পছন্দ

দুর্বল ও জীর্ণশীর্ণ

স্মৃতিশক্তি লোপ

স্থিরতায়, মুক্ত বাতাসে

গরমে ও বিশ্রামে

গরম খাবার

 ৫। সাইলিসিয়াঃ প্রদাহের প্রথম অবস্থায় ক্ষত স্থানে পুঁজ হলে, পেকে ফেটে পুজ নির্গত হয় কিন্তু ব্যথা নেই, সময় সময় চুলকায়, জলের মত দুর্গন্ধহীন স্রাব, মাথা মোটা ঘর্ম প্রধান, ঠান্ডায় বৃদ্ধি, গরমে উপশম। ব্যথা কমে গেলে ক্ষত স্থান কিট কিট করে কামড়ালে।

দৈহিক লক্ষণ

মানসিক লক্ষণ

হ্রাস

বৃদ্ধি

কি খেতে পছন্দ

মাথা মোটা, পেট মোটা, পা নলী নলী ও দুর্বল

উগ্র মেজাজ ও চঞ্চল, হিংস্র ও অস্থির

ঠান্ডা ও মুক্ত বাতাসে

গরমে ও বিশ্রামে

নরম ও ঠান্ডা খাবার

 ৬। এসিড ফ্লোরঃ আক্রান্ত স্থানে অসহনীয় জ্বালা-যন্ত্রণা, ব্যথায় রোগী অস্থির ও মনমরা, ভীষণ দপদপানি ব্যথা, যে ব্যথা ঠান্ডায় উপশম, গরমে বৃদ্ধি।

দৈহিক লক্ষণ

মানসিক লক্ষণ

হ্রাস

বৃদ্ধি

কি খেতে পছন্দ

শরীর খুব দুর্বল

চঞ্চল ও অস্থির

ঠান্ডায় ও শীতল বাতাসে

নড়াচড়ায় ও গরমে

তরল ও ঠান্ডা খাবার

7। ক্যালকেরিয়া সালফ: ক্ষতস্থান ফেটে গিয়ে গন্ধহীন পুঁজ বের হলে আবার সেই পুঁজটা যদি হলুদ ও গন্ধহীন হয়, তবে ম্যাজিকের ন্যায় কাজ করে। পুরতান ক্ষতে বেশি কার্যকরী।

দৈহিক লক্ষণ

মানসিক লক্ষণ

হ্রাস

বৃদ্ধি

কি খেতে পছন্দ

ভগ্ন ও দুর্বল দেহ

মন স্থির রাখতে পারে না

বিশ্রামে ও ঠান্ডায়

সূর্য কিরণ ও উত্তেজক দ্রব্যে

ফল ফুলারী, মিষ্টি ও শাকসবজি

 ৮। লিডাম: আঙ্গুলের কোণেন ব্যথাটি যদি সুঁচ ফোটার মত ব্যথা হয় সেই ব্যথা উপর দিকে যায় অর্থাৎ বগলে বেশী ব্যথা অনুভূত হয়, ঠান্ডায় উপশম।

দৈহিক লক্ষণ

মানসিক লক্ষণ

হ্রাস

বৃদ্ধি

কি খেতে পছন্দ

দুর্বল দেহ ও বাতগ্রস্ত

চঞ্চল ও বিষন্ন

বিশ্রামে ও ঠান্ডায়

নড়াচড়ায় ও গরমে

ঠান্ডা খাবার

৯। আর্সেনিক: অস্থির ছটফটানি, জ্বালা যন্ত্রণা ও ভীষণ ব্যথা, জ্বর, জ পিপাসা, আঙ্গুল হাড়া সাংঘাতিক হবার আশঙ্কা ও মৃত্যু ভয়।

দৈহিক লক্ষণ

মানসিক লক্ষণ

হ্রাস

বৃদ্ধি

কি খেতে পছন্দ

দারুণ দুর্বল

অস্থির ও উদাসিন

গরমে

ঠান্ডায়

উষ্ণ জল ও গরম খাবার

 ১০। ল্যাকেসিস: আঙ্গুলন হাড়া নীল, বেগুনী বা কালো বর্ণ ধারণ করে, অসহ্য জ্বালা যন্ত্রণা থাকে, রোগী বাচাল, হিংস্র ও উগ্র, নিদ্রার পরে যন্ত্রণা বৃদ্ধি, পাখার বাতাসে আরাম।

দৈহিক লক্ষণ

মানসিক লক্ষণ

হ্রাস

বৃদ্ধি

কি খেতে পছন্দ

জীর্ণশীর্ণ ও ক্ষীণকায়

চঞ্চল, বাচাল ও হিংসুক

উত্তাপে

ঘুমের পর, টক ও ঠান্ডায়

উষ্ণ ও টক জাতীয় খাবার

 ১১। পালসেটিলা: শান্ত, ভদ্র, নম্র ও কোমল প্রকৃতির, অল্প ব্যথায় কান্না আসে, নখে ভীষণ ব্যথা, জ্বালা, ঠান্ডায় উপশম কিন্তু পিপাসাহীন।

দৈহিক লক্ষণ

মানসিক লক্ষণ

হ্রাস

বৃদ্ধি

কি খেতে পছন্দ

বামুন ও বেটে

শান্ত, ভদ্র, নম্র

ঠান্ডায়

গরমে

সকল প্রকার ঠান্ডা ও তিক্ত খাবার

১২। এসিড কার্বলিক: ভীষণ জ্বালা যন্ত্রণা, খোচা মারা ব্যথা, সামান্য আঘাতে রক্ত  বের, তারুণ দুর্গন্ধ পুঁজ বের হয়।

দৈহিক লক্ষণ

মানসিক লক্ষণ

হ্রাস

বৃদ্ধি

কি খেতে পছন্দ

উত্তেজনা প্রবণ ও দুর্বল

রাগী ও দুষ্টুমতি

গাড়ীতে চড়লে ও শুইলে

শীতকালে ও আমিষ খাদ্যে

গরম ও উগ্র জাতীয় খাবার

 ১৩। এসিড নাইট্রিক: কেটে ফেলার মত তীব্র ব্যথা, আঙ্গুলে হাড় পচে হাড় বের হয়ে আসে, মন মেজাজ অতি উগ্র ও অস্থির।

দৈহিক লক্ষণ

মানসিক লক্ষণ

হ্রাস

বৃদ্ধি

কি খেতে পছন্দ

রুগ্ন দেহ ও পেট মোটা

খিটখিটে ও উদাসীন

সঞ্চালনে ও ঠান্ডায়

বিশ্রামে ও গরমে

গুরুপাক দ্রব্য ও গরম খাবার

 ১৪। সাইলিসিয়া: পুন:পুন: আঙ্গুল হাড়া হলে।

দৈহিক লক্ষণ

মানসিক লক্ষণ

হ্রাস

বৃদ্ধি

কি খেতে পছন্দ

জীর্ণশীর্ণ

চঞ্চল

উত্তাপে

ঠান্ডায়

উষ্ণ খাবার

 Acid Flour: দপদপে ব্যথায় ঠান্ডা পানি দিলে আরাম লাগে। ৬-৩০ শক্তি। পুরনো অবস্থায় ২০০ শক্তি

Belladonna, Arnica ইত্যাদিও নিম্ন শক্তি খেতে পারে

বাইওকেমিক চিকিৎসা

ফেরাম ফস (Ferrum Phos): আঙ্গুলে হাড়ার প্রথমবস্থায় পীড়িত স্থান গরম লাল অত্যন্ত ব্যথা যন্ত্রনা ইহা উপকারী সেবন বিধি : শক্তি 6x ২-৪ বড়ি এক মাত্রা বয়স অনুপাতে দুই ঘন্টা অন্তর

সাইলেসিয়া (Silicea): প্রদাহের দ্বিতীয়বস্থায় আহত স্থানে পুজ হইবার সম্ভবনা দেখা দিলে ও বেদনা যন্ত্রনা কমিয়া গেলে সাইলেসিয়া প্রয়োগ করতে হয়

সেবন বিধি ; শক্তি 6x বা 12x ১-৪ বড়ি এক মাত্রা বয়স অনুপাতে গরম জলসহ বিকাল তিন ঘন্টা অন্তর ।ফাটিয়া দুর্গন্ধ যুক্ত পুজ পরিলে সাইলেসিয়া 200 শক্তি প্রত্যহ সকাল দুইবার সেবনে ঘা শুকাইয়া যায়

ক্যালকেরিয়া সালফ (Calcaria Sulph): আঙ্গুল হাড়ার ঘায়ে গন্ধ বিহীন হলুদ বর্নের পুজ দেখা গেলে ইহা অব্যর্থ 

সেবন বিধি : শক্তি 30x বা 200x বড়ি এক মাত্রা ।সকল বিকাল দিনে দুই বার ।হোমিও মতে 200 বা 1m বা আরো শক্তি সকাল বিকাল দুই মাত্রা

 

1 تعليقات

إرسال تعليق
أحدث أقدم

Ads

Ads